যা যা আছে

মেশিন লার্নিং কারে কয়?
(৫ মিনিটে পড়া যাবে)

 

Machine learning is a thing-labeler, essentially.
-- Cassie Kozyrkov
কোন বিষয় নিয়ে ভাল করে বোঝার আগে তার সম্পর্কে একটা আবছা, কিন্তু সঠিক ধারণা তৈরি হওয়া ভাল। যেমন, ‘রকেট’ শুনলে তোমার কালীপুজোর হাউই থেকে শুরু করে মহাকাশ, মঙ্গলগ্রহ অবধি সবই মনে হ’তে পারে, এমনকি খুব বেশি Marvel-এর সিনেমা দেখার অভ্যেস থাকলে বদমেজাজি Racoon-টির কথাও মনে পড়তে পারে, কিন্তু সম্ভবত জামা-কাপড় বা থালা-বাসনের কথা মাথায় আসবে না। তেমনই, ‘মেশিন-লার্নিং’ শুনলে তোমার যদি ‘খুব কঠিন’, ‘ম্যাজিক’ বা ‘কল্পবিজ্ঞান’ মনে হয়, তবে সেটা ঠিক নয়, আর ঠিকটা কি সেটা আমরা ৫ মিনিটে বুঝবো।

বড় বড় দোকানে কর্মচারীদের হাতে কখনো একটা যন্ত্র দেখেছো, যার থেকে দাম-ছাপা লেবেল বেরিয়ে আসে, আর সেই লেবেল জিনিসপত্রের গায়ে সেঁটে দেওয়া হয়? আজকাল এই কাজটা করে বারকোড বা QR-কোড। এই কোডগুলোকেও তুমি লেবেল হিসেবে ভাবতে পারো, যার মধ্যে লেখা আছে, জিনিসটা কি, তার দাম কত, এই সব। একই ঘটনা দেখতে পাবে লাইব্রেরীতে গেলে। সব বইয়ের মধ্যেই একটা কাগজ গোঁজা বা সেঁটে দেওয়া থাকে, যাতে বইয়ের নাম, দাম, লেখক, প্রকাশনী, ছাপা-সংক্রান্ত তথ্য – সব থাকে। এই লেবেলগুলোকে কাজে লাগালে অনেক কিছু করা সম্ভব। একই তাকে দোকানের সব বিস্কুট সাজিয়ে রাখা সম্ভব, বিস্কুটের সঙ্গে তেলের শিশি গুলিয়ে না ফেলে। একই তাকে এমন সব জিনিস সাজিয়ে রাখা যায়, যাদের দাম ২০ টাকার কম – এইসব। তা, দোকানে বা লাইব্রেরীতে এই লেবেল বসানোর কাজটা করেন কর্মচারীরা, আর বারকোডের ক্ষেত্রে, যে কারখানায় জিনিসটা তৈরি হয়েছে, তারা।

মেশিন-লার্নিং আর কিছুই নয়, এই লেবেল বসানোর একটা যন্ত্র। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence / AI) বলতে আরও অনেক কিছু বোঝায়, কিন্তু এই লেখার সময়াবধি, AI-ও আসলে এই লেবেল বসানোরই এক বিশেষ ধরন। দুঃখ পাওয়ার কোন কারণ নেই। যতটা ভাবতে পারছো, লেবেল বসানো তার থেকে অনেক বেশি কাজে লাগে।

একটা উদাহরণের সাহায্যে বোঝা যাক ব্যাপারটা?
Source
উপরের ছবিটায় অগুণতি pixel আছে, নানা রঙের, নানা উজ্জ্বলতার। তারা নিজেদের মধ্যে জুড়ে তৈরি করেছে বিভিন্ন আকৃতি। এই সবকিছু দেখে, বুঝে, ওজন করে, নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা যে কেউ ওই ছবিটার দিকে একঝলক তাকিয়েই বুঝতে পারলাম, যে ওটা একটা বেড়ালের ছবি।

কিন্তু যদি একজন programmer কে বলি একটা code লিখতে, যা কিনা ঠিক এই কাজটাই করবে, তাহলে তার কাজ কি হবে? আমি-তুমি, লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনের এই ফসলেরা, কাজটা করে ফেললাম ঠিকই, কিন্তু কি করে করলাম, তা আমাদের ঠিক জানা নেই। আদতে এই পদ্ধতি বা রেসিপি (শৌখিন ভাষায় model) খুঁজে বের করা বেশ কঠিন!

আচ্ছা, যদি এমন হ’তো, যে আমরা গুচ্ছের বেড়ালের ছবি এনে কম্পিউটারকে দেখিয়ে জিগ্যেস করতাম, “এই নাও গাদাখানেক ছবি – এরা সবই বেড়াল”, আর কম্পিউটার নিজেই বেড়ালের ছবি চিহ্নিত করার code-টা বানিয়ে ফেলতো, উদাহরণগুলো দেখে দেখে? সবশেষে, ও কিন্তু সেই লেবেল তৈরি করার কাজটাই করছে, এক্ষেত্রে লেবেলটা ‘বেড়াল’। কিন্তু এতে আমাদের সুবিধেটা কোথায়? সুবিধে হ’লো, একদম নতুন একটা ভাষায় আমরা কম্পিউটারের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। নির্দেশাবলী (কোড) নয়, উদাহরণের সাহায্যে ভাব-বিনিময় হচ্ছে মেশিনে-মানুষে।

এই অদ্ভুত, নতুন এক ধরণের programming paradigm –এর নামই হলো মেশিন-লার্নিং। ম্যাজিক নয়, লেবেল করার কাজ, যা আমাদের বদলে কম্পিউটার করে।












No comments